অনলাইন ডেস্ক ::
সরকারি প্রতিষ্ঠান দিয়ে স্বৈরাচার সরকার নিজেদের ক্ষমতা কুক্ষিগত করে রেখেছিল বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন। একইসাথে সেসব প্রতিষ্ঠানের হারানো গৌরব ফিরিয়ে আনার আকাঙ্ক্ষার কথাও জানান তিনি।
ইউনূস বলেন, “যারা অপরাধ করেছে, তাদের আইনের মাধ্যমে বিচারের আওতায় শিগগিরই উপযুক্ত শাস্তি দেওয়া হবে। এই কথা সব মন্ত্রণালয়, সংস্থা, দপ্তর, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের জন্য প্রযোজ্য। সব অপরাধীর বিচার হবে।”
বৃহস্পতিবার রাতে প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নেওয়ার পর জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে এসব কথা বলেন ড. ইউনূস।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “প্রত্যেকটি অফিসের দায়িত্বরতরা নিজ নিজ দায়িত্ব পালনের মাধ্যমে দ্বিতীয় স্বাধীনতা উপভোগ করবেন। দেশের মর্যাদাকে গৌরবের শীর্ষে নিয়ে যাবেন।”
ইউনূস সবাইকে নির্ভয়ে ও আনন্দচিত্তে নিজ নিজ কর্মস্থলে নিজের জায়গা থেকে সামর্থ্য নিয়ে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, “দেশের সব মানুষকে স্বাধীন, নির্ভয়, নির্ভার থাকার নিশ্চয়তা দেওয়ার জন্য ছাত্ররা শহীদ হয়েছেন। তারা গণঅভ্যুত্থান করেছেন। এই অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সৃষ্ট সরকার সবার। এখানে সবার আকাঙ্ক্ষা পূরণের সরকার থাকবে।”
একইসাথে অরাজকতার বিষবাষ্প যেই ছড়াবে বিজয়ী ছাত্রজনতাসহ মুক্ত মানসিকতার মানুষ, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পূর্ণ শক্তি তাদের ব্যর্থ করে দেবে জানান তিনি।
শেখ হাসিনা সরকারের সমালোচনা করে ড. ইউনূস বলেন, “নিষ্ঠুর স্বৈরাচারী সরকার দূর হয়ে গেছে। কাল সূর্য উদয়ের সঙ্গে সঙ্গে গণতন্ত্রের, সুবিচারের, মানবাধিকারের, নির্ভয়ে মতপ্রকাশের পূর্ণ স্বাধীনতার জন্য, সবার স্বাচ্ছন্দ্যে জীবনের ধারণের সুযোগ প্রদানের জন্য সচেষ্ট সরকারের বলিষ্ঠ সান্নিধ্য ও সহমর্মিতা দলমত নির্বিশেষে সবাই উপভোগ করবে এটিই আমাদের লক্ষ্য। আপনারা আমাদের লক্ষ্য পূরণে সহযোগিতা করুন।”
তিনি বলেন, “সারাবিশ্ব আজ বলছে, সাবাস বাংলাদেশ, সাবাস বাংলাদেশের ছাত্রজনতা। এই অর্জনটাকে আরও অনেক দূর নিয়ে যেতে চাই।”
ড. ইউনূস বলেন, “আমাদের ছাত্রজনতার জন্য এটি খুব কঠিন কাজ নয়। তরুণরা অসম্ভবকে সম্ভব করতে পারে। তারা সেজন্য প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। সবাই যদি ঐক্যবদ্ধ থাকে আর ধ্বংসাত্মক কার্যক্রম পরিহার করে তাহলে বিজয় তাদেরই হবে।”
প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নেওয়ার পর ড. মুহাম্মদ ইউনূস রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় থাকবেন। তার জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবনটি। ভেতরে আসবাবপত্র নতুনভাবে বসানো হয়েছে।
তবে যমুনা ভবনের সামনে এখনো নিরাপত্তা বেষ্টনী বসানো হয়নি। সেনাবাহিনী, আনসারসহ বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করছেন।
প্রসঙ্গত, ২০০৮ সালে এক-এগারোর পট পরিবর্তনের পর সেনা নিয়ন্ত্রিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ফখরুদ্দীন আহমেদ যমুনায় ছিলেন।
এর আগে, ১৯৯৬ সালের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা বিচারপতি হাবিবুর রহমান এবং ২০০১ সালের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা লতিফুর রহমানও তাদের দায়িত্বের দিনগুলোতে এই অতিথি ভবনে ছিলেন।
Leave a Reply