মাসুদ পারভেজ
দীর্ঘ বিরতির পর চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশন থেকে পুরোদমে সব ধরনের ট্রেন চলাচল শুরু হয়েছে। কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সহিংসতার ঘটনায় টানা ২৩ দিন ধরে বন্ধ ছিল ট্রেন চলাচল।
এর আগে সোমবার (১২ আগস্ট) থেকে শুরু হয় মালবাহী ট্রেন চলাচল এবং পরদিন মঙ্গলবার (১৩ আগস্ট) থেকে মেইল, এক্সপ্রেস, লোকাল, কমিউটার ট্রেন চলাচল শুরু হয়।
বৃহস্পতিবার (১৫ আগস্ট) চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার শফিকুল ইসলাম সব ধরনের ট্রেন চলাচল শুরুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
জানা গেছে, চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশন থেকে চট্টগ্রাম-চাঁদপুর রুটে চলাচলকারী সাগরিকা এক্সপ্রেস ট্রেনটি বৃহস্পতিবার (১৫ আগস্ট) সকাল ৮টায় ছেড়ে গেছে। চট্টগ্রাম থেকে ঢাকাগামী কর্ণফুলী এক্সপ্রেস ট্রেনটি সকাল ৯টা ৪৫ মিনিটে ছেড়ে গেছে।
এছাড়া বিকেল ৩টায় মহানগর গোধুলি ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাবে।
বিকেল ৪টায় কক্সবাজার এক্সপ্রেস চট্টগ্রাম থেকে ঢাকা ও ময়মনসিংহগামী নাসিরাবাদ এক্সপ্রেস ট্রেনটি বিকেল ৪টা ১০ মিনিটে চট্টগ্রামে স্টেশন ছেড়ে যাবে।
চট্টগ্রাম থেকে ঢাকাগামী সোনার বাংলা এক্সপ্রেস ট্রেনটি ৪টা ৪৫ মিনিটে চট্টগ্রাম স্টেশন ছেড়ে যাবে। চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশন থেকে বিকাল সাড়ে ৫টায় নাজিরহাট লোকাল ট্রেন ছেড়ে যাবে। সন্ধ্যা ৬টায় চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশন থেকে চাঁদপুরের উদ্দেশ্যে মেঘনা এক্সপ্রেস ছেড়ে যাবে। সিলেটগামী উদয়ন এক্সপ্রেস ট্রেনটি রাত ৯টা ৪৫ মিনিটে চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশন ছেড়ে যাবে। ১১টা ১৫ মিনিটে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকাগামী পর্যটন এক্সপ্রেস ট্রেন ছেড়ে যাবে। এরপর রাত ১১টা ৩০ মিনিটে তূর্ণা নিশীতা ও ১১টা ৪৫ মিনিটে ঢাকাগামী মেইল ট্রেন চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশন ছেড়ে যাবে।
এছাড়াও চট্টগ্রাম স্টেশন থেকে বেলা ১২টার দিকে হাটহাজারী ও দোহাজারীর উদ্দেশ্য দুটি মালবাহী ট্রেন ছেড়ে গেছে।
গত বুধবার চট্টগ্রাম গুডস পোর্ট ইয়ার্ড (সিজিপিওয়াই) থেকে ৩টি কন্টেনারবাহী ট্রেন ঢাকার কমলাপুর আইসিডির উদ্দেশ্যে ছেড়ে গেছে। এছাড়াও ঢাকা ক্যান্টমেন্ট, রংপুর, সিলেট এবং চট্টগ্রামের দোহাজারী ও হাটহাজারীতে ৫টি তেলবাহী ওয়াগন (তেলের গাড়ি) ছেড়ে গেছে বলে জানান চট্টগ্রাম গুডস পোর্ট ইয়ার্ডে দায়িত্বরত রেলওয়ের ট্রাফিক ইন্সপেক্টর এনামুল হক সিকদার।
সরকারি চাকরিতে কোটা নিয়ে আন্দোলনের মধ্যে গত ১৬ জুলাই ঢাকা, গাজীপুর, চট্টগ্রাম, ফেনী ও ময়মনসিংহ, রংপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় রেলপথ অবরোধ করা হলে ট্রেন চলাচলে বিঘ্ন ঘটে। পরদিন ট্রেন চলাচল কিছুটা স্বাভাবিক হলেও ১৮ জুলাই ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচির দিন সারাদেশে ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পরদিন ১৯ জুলাই সরকারের কারফিউ জারি করার পর থেকে সারাদেশে পুরোপুরি বন্ধ ছিল ট্রেন চলাচল। এর মধ্যে গত ১-৩ আগস্ট পর্যন্ত সীমিত পরিসরে কমিউটার ট্রেন চলাচল করেছিল। পরে ৪ আগস্ট রাতে অনির্দিষ্টকালের জন্য সব ধরনের ট্রেন চলাচল বন্ধ ঘোষণা করে বাংলাদেশ রেলওয়ে।
মঙ্গলবার থেকে কন্টেইনার ট্রেন ও তেলবাহী ট্রেন চলাচল শুরু হয়। বুধবার থেকে চলে মেইল, লোকাল, কমিউটার ও বৃহস্পতিবার শুরু হয় সকল আন্তঃনগর ট্রেন চলাচল।
চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার শফিকুল ইসলাম বলেন, প্রথমে মালবাহী ট্রেন চলাচল শুরু হয়। এরপর লোকাল, মেইল ও কমিউটার ট্রেন চলাচল শুরু হয়েছে। আজ থেকে সব ধরনের ট্রেন চলাচল শুরু হয়েছে। যাত্রীদের সুষ্ঠু সুন্দর পরিবেশে ট্রেন ভ্রমণ নিশ্চিত করতে আমরা বদ্ধপরিকর।
Leave a Reply