1. coxsbazarshomachar@gmail.com : admin :

‘আজ আমাদের শহরের বিয়ে’! জনতার উত্তাল সমুদ্রে সালাহউদ্দিন আহমদ

  • পোস্টিং সময় : বুধবার, ২৮ আগস্ট, ২০২৪

বিশেষ প্রতিবেদক:
কক্সবাজারের প্রাণপুরুষ সালাহউদ্দিন আহমদ কক্সবাজার এসেছেন। তাঁর এই আগমনকে ঘিরে মানুষের উচ্ছ্বাস ও জনতার উত্তাল ঢেউ দেখে এক নেটিজেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লিখেছেন, ‘আজ আমাদের শহরের বিয়ে’! ওই নেটিজেনের কথাটি মনে দাগ কাটলেও সেই কথা দিয়ে সালাহউদ্দিন আহমদের কক্সবাজার আগমনের এই উচ্ছাসকে কখনোই সঠিক ভাবে বুঝানো সম্ভব নয়। বিয়ের মতো আয়োজন হলেও তা ছিল অনন্য এক আয়োজন।

রাস্তায় রাস্তায় মানুষের ঢল, পথে পথে শত শত তোরণ, ব্যানার-ফেষ্টুনে ভরা ছিল মহাসড়ক, সড়কের অলিগলি। যেখানে লেখা ছিল একজন ‘মৃত্যুঞ্জয়ী’ সালাহউদ্দিনকে ফিরে পাওয়ার উচ্ছাস আর আবেগে ভরপুর নানা স্তুতি বাক্য।

কক্সবাজার বিমানবন্দর থেকে কক্সবাজার শহর, কক্সবাজার-চট্টগ্রাম মহাসড়ক, চকরিয়ার বাস টার্মিনাল আর পেকুয়ার চৌমুহনীর (শহীদ ওয়াসিম চত্বর) গণসংবর্ধনা পর্যন্ত ছিল কেবল মানুষ আর মানুষ।

এরা কেবল বিএনপির রাজনৈতিক নেতা-কর্মী ছিলেন না, এদের অধিকাংশই সাধারণ মানুষ, যারা বছরের পর বছর ধরে তাদের প্রিয় নেতা ও অভিভাবক সালাহউদ্দিন আহমদের জন্য অপেক্ষার প্রহর গুনেছেন। কত মানুষ এসেছিলেন সালাহউদ্দিন আহমদকে স্বাগত জানাতে রাজপথে? এমন প্রশ্ন যদি কেউ করেন- তার জন্য উত্তর হলো কারা বাড়িতে বসেছিলেন রাজপথে না এসে! আসলে ঘরের সব পুরুষ মানুষই ছিলেন রাজপথে, সালাহউদ্দিন আহমদকে এক নজর দেখতে।

১০ বছর ২ মাস ১৪ দিন পর বুধবার (২৮ আগষ্ট) কক্সবাজারে পা রেখেছেন এই জনপদের মানুষ সালাহউদ্দিন আহমদ, যাকে জনতা আদর করে ডাকছেন ‘বাঘ’ বলে।

গণসংবর্ধনায় স্লোগান উঠেছে, কে এসেছে, কে এসেছে? বাঘ এসেছে, বাঘ এসেছে!

দেশের বৈষম্যের বিরুদ্ধে রাজনীতি করা এই দেশের ‘গুম বাহিনী’র হাতে গুম হয়ে দুই মাস একদিন নিখোঁজ থাকার পর উদ্ধার হয়েছিলেন ভারতের মেঘালয় রাজ্যের শিলং শহরে। তারপর কেটে গেছে অনেককাল।

নিজের ‘মায়ের দেশ’ কক্সবাজার থেকে ফিরে স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে নেতৃত্ব দিতে গিয়ে ‘গুম’ হওয়ার পর এই প্রথম তিনি নিজের বাড়িতে ফিরতে পেরেছেন। আর কক্সবাজারের মানুষও তাদের প্রিয় নেতাকে উজাড় করে ভালোবাসা দিয়েছেন।

তিনি বেলা ১১টা ১৫ মিনিটে বেসরকারি একটি উড়োজাহাজ নভোএয়ারের একটি ফ্লাইটে কক্সবাজার অবতরণ করেন। আনুষ্ঠানিকতা শেষে ভিআইপি লাউঞ্জ থেকে দীপ্ত পায়ে হেঁটে বের হয়ে আসেন জনতার কাতারে। আর সেই থেকে দিনভর তিনি ছিলেন ভালোবাসা আর আবেগে জড়ানো সাধারণ মানুষের সাথে। এই ভালোবাসা এমন ছিল যে, বেলা সাড়ে ১১টার পর কক্সবাজার বিমানবন্দর থেকে বের হয়ে চকরিয়ার বাস টার্মিনালের গণসংবর্ধনা মঞ্চে পৌঁছতে নেতা সালাহউদ্দিনের সময় লেগেছে প্রায় সাড়ে ৫ ঘন্টা। অথচ, যেই পথ তিনি পাড়ি দিতে পারতেন মাত্র এক ঘন্টায়।

তিনি বিকেল সাড়ে ৫টার পর চকরিয়ার গণসংবর্ধনা মঞ্চে পৌঁছান। দীর্ঘ অপেক্ষায় থাকা লাখো জনতা তখন উচ্ছাসে ফেটে পড়েন। গগণ বিদারী স্লোগান তুলেন, ‘বাঘ এসেছে. বাঘ এসেছে’!

এই সাড়ে ৫ ঘন্টায় তিনি কক্সবাজার শহরের প্রধান সড়ক হয়ে সাধারণ মানুষের অভিবাদন নিতে আর দিতে দিতেই কক্সবাজার বাস টার্মিনাল, লিংক রোড, বাংলাবাজার, খরুলিয়া, রামু বাইপাস, রামু চা বাগান, জোয়ারিয়ানালা, ঈদগাঁও, ইসলামপুর, খুটাখালী, ডুলাহাজারা, মালুমঘাট হয়ে জনতার ঢেউ টেলে তিনি অত্যন্ত ধীর গতিতে চকরিয়ায় পৌঁছান।

চকরিয়া পৌঁছেই সালাহউদ্দিন আহমদ দুই হাত তুলে লাখো জনতাকে অভিবাদন জানান আর শুরু করেন তাঁর ভরাট কন্ঠের বক্তৃতা, যেখানে উঠে এসেছে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক রাজনীতির নানা বিষয়।

কক্সবাজার চকরিয়া উপজেলা, মাতামুহুরী সাংগঠনিক উপজেলা ও চকরিয়া পৌর বিএনপি এই গণসংবর্ধনার আয়োজন করে। চকরিয়া উপজেলা বিএনপির আহবায়ক এনামুল হকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই গণসংবর্ধনায় কক্সবাজার জেলা বিএনপির সভাপতি শাহজাহান চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট শামীম আরা স্বপ্না ছাড়াও জেলা, উপজেলা, পৌর বিএনপিসহ দলটির অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতারা বক্তব্য রাখেন।

তারপর জনতার ঢেউ ঠেলে সালাহউদ্দিন আহমদ ও তাঁর সহধর্মিনী সাবেক সংসদ সদস্য এডভোকেট হাসিনা আহমেদ পেকুয়ার পথে রওয়ানা হন। পেকুয়া চৌমুহনী চত্বরের বিকেল ৪টার গণসংবর্ধনায় সালাহউদ্দিন আহমদ পৌঁছাতে পারেন সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায়। তারপর সেখানেও আবেগঘন বক্তব্য শেষ করে তিনি সারাদিনের ক্লান্তি নিয়ে দীর্ঘ ১০ বছর দুই মাস ১৪ দিন পর পা রাখলেন নিজের ঘরে।

সোস্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো পড়ুন
সর্বস্বত্ত্ব সংরক্ষিত © ২০২৩ কক্সবাজার সমাচার
Site Customized By NewsTech.Com
error: Content is protected !!