বার্তা পরিবেশক:
সাহিত্য-সংস্কৃতি হচ্ছে একটি জাতির উন্নয়নের মাপকাঠি। যে জাতির সাহিত্য-সংস্কৃতি যত উন্নত সেই জাতি, সেই দেশ তত উন্নত। সাহিত্য-সংস্কৃতির উন্নতি ছাড়া কোনো দেশ, কোনো জাতি উন্নতি লাভ করতে পারে না। উন্নত জাতি হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ করতে পারে না। শুধুমাত্র পড়ালেখা দিয়ে কোনো জাতিকে উন্নত জাতি বলা যায় না। নিজেদেরকে উন্নত জাতি হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে হলে সাহিত্য-সংস্কৃতির চর্চা বিকল্প নেই। তাই পড়ালেখার পাশাপাশি নিজেদেরকে সাহিত্য-সংস্কৃতির সাথে সম্পৃক্ত করতে হবে, নিজেদের সাহিত্য-সংস্কৃতিকে উন্নতি করতে হবে।
কক্সবাজার সাহিত্য একাডেমির তরুণ লেখক প্রকল্পের প্রথম পাঠ উপলক্ষ্যে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে উত্তরণ মডেল কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর একে এম ফজলুল করিম চৌধুরী এসব কথা বলেন।
আজ ১২ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ (বৃহস্পতিবার) উত্তরণ মডেল কলেজের সভা কক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন একাডেমি সভাপতি মুহম্মদ নূরুল ইসলাম।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি আরো বলেন, কক্সবাজার সাহিত্য একাডেমি কক্সবাজার জেলায় সাহিত্যে একটি নবযুগের অবতারনা করেছে। একাডেমি শিশু-কিশোর থেকে শুরু করে সব বয়সের মানুষকে সাহিত্যে সম্পৃক্ত করার একটি সমন্বিত প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। কক্সবাজারবাসীকে তাদের এই প্রচেষ্টার সাথে সহযোগী হওয়া উচিত।
তিনি বলেন, আজকের শিশু আগামী দিনের ভবিষ্যৎ দেশের কর্ণধার। তাই শিশু-কিশোরদেরকে এখন থেকে আদর্শ মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। নিজেকে আদর্শ মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে হলে সাহিত্য-সংস্কৃতি চর্চা করা অপরিহার্য।
অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সীতাকুন্ড লতিফা সিদ্দিকী গার্লস ডিগ্রি কলেজের প্রাক্তন অধ্যক্ষ অধ্যাপক মকবুল আহমদ, উত্তরণ মডেল কলেজের বাংলা বিভাগের প্রভাষক মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম ও কলেজের উৎপাদন ব্যবস্থাপনা ও বিপণন বিভাগের প্রভাষক মিসেস জয়নাব আরা।
সভাপতির বক্তব্যে মুহম্মদ নূরুল ইসলাম বলেন, কক্সবাজার সাহিত্য একাডেমি স্কুল পর্যায়ের শিশু-কিশোরদের প্রতিভা অন্বেষণ কর্মসূচি চালু করেছে ২০১৬ সাল থেকে। এর মাধ্যমে জেলার বিভিন্ন প্রাথমিক বিদ্যালয়, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও মাদরাসার শিক্ষার্থীরা সম্পৃক্ত হয়েছে। অনেক শিশু-কিশোরের সাহিত্যে হাড়েখড়ি হয়েছে। একাডেমি, তরুণদেরকে সাহিত্যে সম্পৃক্ত করার জন্য একটি প্রকল্প হাতে নিয়েছে। এই প্রকল্পটি সফল হলে কক্সবাজার জেলার সাহিত্য-সংস্কৃতি চর্চা ভবিষ্যতে উত্তরোত্তর সমৃদ্ধি ঘটবে বলে আমাদের বিশ্বাস। এই প্রকল্পের আওতায় একাডেমির পক্ষ থেকে ‘তরুণ সংলাপ’ নামের একটি সাহিত্য পত্রিকা প্রকাশ করা হবে। যা শুধু এই জেলা নয় সমগ্র বাংলাদেশে একটি ব্যতিক্রম দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে।
অধ্যাপক মকবুল আহমদ অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বলেন, শিক্ষার্থী যারা লেখা চর্চা করতে আগ্রহী তারা চারটি কাজ করবে।
প্রথমটি হলো প্রতিদিনের কাজের অভিজ্ঞতা ভালো-মন্দ যাই হোক না কেনো, ঘুমাবার আগে বসে একটি নোট বইতে লেখা চর্চা করা। যাকে বলে ডায়েরি লেখা। তা নিয়ে বেশি কিছু কল্পনা করার প্রয়োজন নেই। সারাদিন যা ঘটে তাই বাক্যে রূপ দিতে চেষ্টা করা। এভাবে লিখতে লিখতে তার গদ্য চর্চা হবে। শুদ্ধ গদ্য লিখতে জানাও একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ। সাহিত্যচর্চা ছাড়াও এ চর্চা তার ব্যবহারিক জীবনে কাজ দেবে।
দ্বিতীয়ত : শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের লেখক হতে যারা আগ্রহী তারা সাহিত্যের অধ্যাপকের নেতৃত্বে কবিতা, ছড়া গল্প ও প্রবন্ধ প্রভৃতি লিখে একটি দেয়াল পত্রিকা প্রকাশ করা।
তৃতীয়ত: দেশের বরেণ্য লেখক, কবি-সাহিত্যিকের ও কৃতী ব্যক্তিদের জীবনী পড়া। অন্তত বছরে চারটি জীবনী পড়ার টার্গেট করা। এতে লেখক কবিদের জীবনের নানা বিষয় জানার সাথে সাথে তাঁরা কীভাবে লেখক হয়ে উঠেছেন তা জানা যাবে।
চতুর্থত : ছড়া, কবিতা, গল্প, প্রবন্ধ সাহিত্যের শিক্ষকের পরামর্শে কোন বয়সে কোন বই পড়বে তা জেনে পড়ার চেষ্টা করা। পড়তে পড়তে শিক্ষার্থী বুঝতে পারবে তার কি বিষয়ে আগ্রহ ও আকর্ষণ।
Leave a Reply