জিয়াউল হক জিয়াঃ
কক্সবাজারের চকরিয়ায় সাংবাদিক আব্দুল হামিদের স্ত্রী পারভীন আকতার (৩৮) ও মেয়ে হাফসা মণি (২০) কে ছুরিকাঘাতে হত্যাকারীসহ দায়ীদের ফাঁসির দাবিতে বিভিন্ন পেশাজীবি পুরুষ-নারীর যৌথ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সোমবার (৩ ফেব্রুয়ারী) বিকেল ৪টা ৪৫ মিনিটের সময় চকরিয়া পৌর-শহরের নিউ মার্কেটের সামনে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে এই বিশাল মানববন্ধন করা হয়।
খুনি মেহেদীর স্ত্রী হাফসা মণি (২০) ও শাশুড়ী পারভীন আকতার (৩৮) পৌরসভার ৯ নং ওয়ার্ডের দিগরপানখালী এলাকার বাসিন্দা সাংবাদিক আব্দুল হামিদের মেয়ে ও সহধর্মিণী।
খুনি-শওকত হাসান মেহেদী (২২) উপজেলার ফাঁসিয়াখালী ইউপির ৩নং ওয়ার্ডের মারকাজ মসজিদ সংলগ্ন আজমুল্লাহ পাড়ার বাসিন্দা মৌলভী আবুল কাশের ছেলে।সে একজন টিকটকার।
মানববন্ধনে প্রতিবাদী বক্তব্য রাখেন-চকরিয়ার সামাজিক সংগঠন নুরানী কাফেলার সভাপতি, নিউ মার্কেট ব্যবসায়ীর সভাপতি, ফল ব্যবসায়ীর সভাপতি, পৌরসভার জামায়াতের সেক্রেটারী,পৌর বিএনপির প্রভাবশালী কয়েক জন নেতা, ব্লাড ডোনেটিং ক্লাবের সভাপতি ও সম্পাদক সহ বিভিন্ন শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানে কর্মরত প্রভাষক, শিক্ষকেরা এ সময় বলেন-একজন টিকটকার খুনি শওকত হাসান মেহেদী বিগত ৭/৮ মাস আগে ফুসলিয়ে তুলে নিয়ে দীর্ঘদিন লুকিয়ে রেখে বিয়ে করেছিল। সেসময় সাংবাদিক আব্দুল হামিদ মেয়েটিকে ফিরিয়ে আনতে আপ্রাণ চেষ্টা করেছিলেন। সাংবাদিক হামিদ বলেন, পরবর্তীতে জেনেছি খুনি মেহেদীর পিতা ও মাতা মেয়ে হাফসাকে লুকিয়ে রেখে ছেলেকে বিয়ে দেয়। পরে স্বামীর পরিবার যৌতুকের জন্য হাফসা মণিকে নির্যাতন শুরু করে। এক পর্যায়ে সম্প্রতি মেয়ের আকুতি জড়িত ফোন পেয়ে বাবা হাফসাকে পিত্রালয়ে নিয়ে আসেন। ইতিমধ্যে হাফসার স্বামী মেহেদী তাকে নিয়ে যেতে চাইলে আত্মীয় স্বজনদের উপস্থিতি ছাড়া মেয়ে দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন সাংবাদিক হামিদ। কিন্তু গত ১৭ জানুয়ারী (শুক্রবার) জুমার নামাজের সময় খুনি মেহেদী নতুন চাকু নিয়ে হঠাৎ শ্বশুর বাড়ীতে ঢুকে প্রথমে তার স্ত্রী হাফসাকে চুরিকাঘাত করে। পরে মেয়ের চিৎকার শুনে মা অর্থাৎ সাংবাদিক আব্দুল হামিদের স্ত্রী খুনির শাশুড়ী দৌঁড়ে আসলে তাকেও ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায় মেহেদী। ঘটনার দিন রাতে লামা থানার পুলিশ খুনি মেহেদীকে আটক করে চকরিয়া থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেন। হাফসা মণি ঘটনাস্থলে মারা যাওয়ার ১৪ দিন পর গুরুতর
আহত শাশুরী পারভীন আকতার (৩৮) গত ৩১ জানুয়ারী (শুক্রবার) ভোর ৫টার সময় চট্টগ্রাম পার্কভিউ হাসপাতালে চিকিৎসাধিন অবস্থায় মারা যান।
দিন-দুপুরে খুন করে খুনি আর সহযোগীরা যাতে কোনভাবেই পার পেতে না পারে সে লক্ষ্যে বিভিন্ন পেশাজীবি ৬/৭ হাজার মানুষের উপস্থিতি নিয়ে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। যদি খুনির দ্রুত ফাঁসি নিশ্চিত করা না হয় তাহলে আমরা আগামীতে মানববন্ধন চেয়ে আরো কঠিন সিদ্ধান্তের কর্মসূচি ঘোষণা করে পালন করতে বাধ্য হবো বলে বক্তারা হুশিয়ারি দেন।
ভুক্তভোগী সাংবাদিক আব্দুল হামিদ বলেন-আমি আমার মেয়ে হাফসা আর তার মা আমার সহধর্মিণী পারভীনকে হারিয়েছি। তাদেরকে ছুরিকাঘাতে খুন করা জামাতা মেহেদী সহ তার সহযোগী মামলার আসামী সকলের নিশ্চিত ফাঁসি হোক এই কামনায় সংশ্লিষ্ট থানা প্রশাসনের কাছে আসামী গ্রেফতার আর আদালতের বিজ্ঞ বিচারকের আন্তরিক সহযোগিতা কামনা করছি বলে মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন।
Leave a Reply