মোঃ নাজমুল হুদা, লামাঃ লামার পার্শ্ববর্তী চকরিয়া উপজেলার ছিটমহলখ্যাত ও অবহেলিত ইউনিয়ন বমু বিলছড়িতে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে চরম শিক্ষক সংকট বিরাজ করছে। এতে শিক্ষার্থীদের শিক্ষা কার্যক্রম মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে, ফলে বিপাকে পড়েছেন অভিভাবকরা।
স্থানীয় বিশিষ্টজনদের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষক স্বল্পতার কারণে শ্রেণিকক্ষে নিয়মিত পাঠদান সম্ভব হচ্ছে না। তৃতীয় ধাপের শিক্ষক নিয়োগে এই পিছিয়ে পড়া অঞ্চলে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে নিয়োগ দেওয়ার দাবি জানান তারা। তাদের অভিযোগ, প্রতি নিয়োগের ক্ষেত্রে বাণিজ্যিক কারণে সুবিধাবঞ্চিত এলাকাগুলোতে শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হয় না। বদলির পরও এখানে কেউ আসতে চায় না, ফলে শিক্ষার মান আরও নিম্নগামী হচ্ছে।
শিক্ষক সংকটের ভয়াবহ চিত্র:
সাম্প্রতি সময়ে সরেজমিনে দেখা যায়, বমু বিলছড়ি ইউনিয়নে চারটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। অনুমোদিত ২৬টি শিক্ষকের পদ থাকলেও কর্মরত আছেন মাত্র ১১ জন।
প্রধান শিক্ষক পদে মাত্র একজন নিয়োগপ্রাপ্ত আছেন, বাকি তিনটি বিদ্যালয় ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের ওপর নির্ভর করে চলছে। প্রধান শিক্ষকসহ মোট ১৫টি পদ শূন্য রয়েছে।
বিদ্যালয়ভিত্তিক শিক্ষক সংকটের চিত্র:
বমু সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়: অনুমোদিত পদ ৮টি, কর্মরত ২ জন, শূন্য ৬টি।
বিলছড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়: অনুমোদিত পদ ৮টি, কর্মরত ৪ জন, শূন্য ৪টি।
নাজমা ইয়াছমিন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়: অনুমোদিত পদ ৫টি, কর্মরত ৩ জন, শূন্য ২টি।
আলহাজ্ব হাকিম আব্দুল গণি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়: অনুমোদিত পদ ৫টি, কর্মরত ১ জন, শূন্য ৪টি।
অভিভাবকদের দাবি:
শিক্ষার মানোন্নয়নে দ্রুত শিক্ষক নিয়োগ নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন অভিভাবকরা। তারা চান, বাণিজ্যিক প্রভাবমুক্ত একটি স্বচ্ছ নিয়োগ ব্যবস্থা, যাতে পিছিয়ে পড়া এই জনগোষ্ঠীর শিশুরা যথাযথ শিক্ষা লাভ করতে পারে।
বমু বিলছড়ি ইউনিয়ন পরিষদের নবাগত প্রশাসক এ.জেড.এম মোছাদ্দেকুল ইসলাম জানান, সামনের মাসে আমাদের উপজেলা মাসিক মিটিং এ বিষয়ে উপস্থাপন করব ইনশাআল্লাহ।
চকরিয়া উপজেলা শিক্ষা অফিসার মহিউদ্দিন মাহমুদ আলমগীর বলেন, সেখানে শিক্ষক সংকট রয়েছে আমরা অবগত আছি। সেক্ষেত্রে সর্বোচ্চ চেষ্টা থাকবে নতুন শিক্ষক দেওয়ার জন্য।
প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার প্রতিক্রিয়া
কক্সবাজার জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোহাম্মদ শাহীন মিয়া জানান, বমু বিলছড়ি ইউনিয়নে অনেক শিক্ষক পদ শূন্য রয়েছে। সামনে নতুন নিয়োগ হবে, এবং এই সংকট নিরসনে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করা হবে।
Leave a Reply