নিজস্ব প্রতিবেদকঃ কক্সবাজারের চকরিয়া থানা হাজতে দুর্জয় চৌধুরী  (২৭) নামে এক ব্যক্তি আত্মহত্যা  করেছেন। বৃহস্পতিবার  দিবাগত রাত ১২ ট থেকে ৪ টার মধ্যে এ ঘটনা  ঘটতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। নিহত দুর্জয় চৌধুরী  চকরিয়া  পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ড ভরামুহুরী হিন্দুপাড়ার কমল চৌধুরীর ছেলে ও চকরিয়া সরকারী উচ্চ বিদ্যালযের অফিস সহকারী  ছিলেন।

এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে শুক্রবার বিকেলে চকরিয়া কেন্দ্রীয় কালী মন্দির দুর্গা পুজা উদযাপন কমিটির আয়োজনে মানববন্ধন, বিক্ষোভ মিছিল ও চট্টগ্রাম – কক্সবাজার মহাসড়ক বিকেল ৪টা থেকে ৫টা পর্যন্ত  এক ঘন্টা অবরোধ করা হয়।

‎জানা যায়, চকরিয়া  সরকারি  উচ্চ বিদ্যালয়ের  প্রধান শিক্ষক রাবেয়া খানম দুই লক্ষ ৮৩ হাজার টাকা আত্মসাতের অভিযোগ এনে দুর্জয় চৌধুরীর বিরুদ্ধে বৃহস্পতিবার রাতে থানায় অভিযোগ দেন। অভিযোগ দেওয়ার সময় আত্মহত্যাকারী দুর্জয় প্রধান শিক্ষকেরর সাথে থানায় ছিলেন। এদিকে দুর্জয় চৌধুরীর পরিবারের লোকজন জানায়, প্রধান শিক্ষক রাবেয়া খানমের দুর্জয়কে থানায় ডেকে নিয়ে  পুলিশে হস্তান্তর করেন।

পরে ‎রাত ১২ টা থেকে ভোর রাত ৪ টার মধ্যে থানা হাজতে দুর্জয় চৌধুরী নিজের পরণের শার্ট গলায় প্যাঁচিয়ে দরজার গ্রীলে ঝুলে আত্মহত্যা করেন। এদিকে রাতের অভিযানে গ্রেফতারকৃত অন্য  আসামীকে ভোরে থানা হাজতে নিয়ে গেলে দুর্জয়ের ঝুলন্ত লাশ দেখতে পায় পুলিশ। বিষয়টি জেনে চকরিয়া সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির  সভাপতি ও উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) রুপায়ন দেব এর উপস্থিতিতে সুরতহাল  রিপোর্ট  তৈরী  করে লাশ উদ্ধার  করে ময়নাতদন্তের  জন্য  মর্গে পাঠানো হয়।

এবিষয়ে সহকারী কমিশনার (ভূমি) রূপায়ন দেব জানান, বৃহস্পতিবার দুপুরে চকরিয়া সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক দুর্জয়কে সাথে নিয়ে তাঁর কাছে যান। এসময় জিজ্ঞাসাবাদে অভিযুক্ত দুর্জয় চৌধুরী টাকা আত্মসাৎ করে খরচ করে ফেলার কথা স্বীকার করলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার জন্য থানার ওসিকে ফোনে জানান।

‎চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, রাত ৮টার দিকে স্কুলের প্রধান শিক্ষক দুর্জয়কে সাথে নিয়ে থানায় আসেন। এ সময় প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সে আমার কাছেও দায় স্বীকার করলে তাকে ৫৪ ধারায় আটক ও অভিযোগ গ্রহণ করে এএসপি সার্কেলসহ আমরা অভিযানে বেরিয়ে যাই। ভোর সকালে থানা হাজতে দুর্জয়ের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়।

এদিকে চকরিয়া সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রাবেয়া খানমের ফাঁসির দাবিতে শুক্রবার বিকেলে চকরিয়া কেন্দ্রীয় কালী মন্দির দুর্গা পূজা উদযাপন কমিটির আয়োজনে থানা সেন্টারে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করে। মানববন্ধনে চকরিয়া উপজেলা বিএনপির আহবায়ক এনামুল হক ও ইমাম সমিতির সভাপতি মাওলানা কফিল উদ্দিন ফারুকী সংশ্লিষ্ট সকলকে শান্ত থাকার আহবানের পাশাপাশি দোষীদেরকে আইনের আওতায় আনার দাবি জানান।

আজ সকাল থেকে কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ  সুপার মো. জসিম উদ্দিন ঘটনাস্থলে অবস্থান করছেন। তিনি বলেন, পুলিশ প্রশাসন প্রাথমিক তদন্তের পর চকরিয়া থানার এএসআই হানিফ মিয়াসহ তিন পুলিশকে জেলা পুলিশ লাইনে ক্লোজ করা হয়েছে। এছাড়াও আরো কোন পুলিশ সদস্যের দোষ পাওয়া গেলে তাদের বিরুদ্ধেও আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

‎