অনলাইন ডেস্ক :
সাদা পোশাকে নতুন এক বাংলাদেশকে দেখলো ক্রিকেটবিশ্ব। পাকিস্তানের বিপক্ষে কখনো টেস্ট জিততে না পারা দলটা পাকিস্তানকে তাদের মাঠেই হোয়াইটওয়াশ করে ইতিহাস সৃষ্টি করলো। দ্বিতীয় টেস্টে তারা বাবর আজমদের হারিয়েছে ৬ উইকেটে। বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশীপের অধীনে দুই ম্যাচ টেস্ট সিরিজের দুটিতেই পাকিস্তানকে হারিয়ে ২-০ ব্যবধানে সিরিজ জিতল টাইগাররা।
এটি বাংলাদেশের নবম টেস্ট সিরিজ জয়। আর দেশের বাইরে তৃতীয় টেস্ট সিরিজ জয় টাইগারদের। ২০০৯ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজ এবং ২০২১ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে তাদেরই মাঠে জয় পেয়েছিল বাংলাদেশ। অন্যদিকে এই নিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো ঘরের মাঠে হোয়াইটওয়াশের লজ্জা পেলো পাকিস্তান।
রাওয়ালপিন্ডিতে দ্বিতীয় টেস্টের প্রথম ইনিংসে ২৭৪ রানে অলআউট হয় পাকিস্তান। এরপর ব্যাটিংয়ে নেমে ২৬২ রানে গুটিয়ে যায় বাংলাদেশ। ১২ রানে এগিয়ে থেকে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিংয়ে নেমে টাইগারদের পেস তোপে ১৭৪ রানেই গুটিয়ে যায় পাকিস্তান। যার ফলে প্রথমবারের মতো পাকিস্তানের বিপক্ষে সিরিজ জিততে বাংলাদেশের দরকার ছিল ১৮৫ রান। সেই লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে ৪ উইকেট হারিয়ে জয়ের লক্ষ্যে পৌঁছে যায় বাংলাদেশ। এই জয়ে প্রথমবারের টেস্টে পাকিস্তানকে হোয়াইটওয়াশ করে সিরিজ জিতলো বাংলাদেশ।
বৃষ্টির শঙ্কা ছিল। তবে পাকিস্তানের আবহাওয়া অধিদপ্তরের বক্তব্য ছিল, ম্যাচ শুরু হবে যথাসময়ে। আর সেটাই ঠিক হলো। যথাসময়েই শুরু হয়েছে পঞ্চম দিনের খেলা। আজ (মঙ্গলবার) পঞ্চম দিনে ব্যাটিংয়ে নামেন আগের দিনের দুই অপরাজিত ব্যাটার সাদমান ইসলাম ও জাকির হাসান। শুরু থেকেই এই দুই ব্যাটার দেখেশুনেই খেলতে থাকেন। তবে নিজদের জুটিকে বেশিদূর নিয়ে যেতে ব্যর্থ হন তারা।
পঞ্চম শুরুতেই মির হামজার বলে বোল্ড হয়ে সাজঘরে ফিরে যান জাকির হাসান। আউট হওয়ার আগে করেন ৩৯ বলে ৪০ রান। তার বিদায়ে ৫৮ রানে প্রথম উইকেট হারায় বাংলাদেশ।
জাকিরের বিদায়ের পর শান্তর সঙ্গে জুটি গড়েন সাদমন। তবে এই জুটিকে বেশিদূর আগাতে দেননি খুররম শেহজাদ। খুররম শেহজাদের বলে মিড অফে শান মাসুদের হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে প্যাভিলিয়নে ফিরে যান সাদমান ইসলাম। আউট হওয়া আগে করেন ৫১ বলে ২৪ রান। তার বিদায়ে ৭০ রানে দুই উইকেট হারায় বাংলাদেশ।
৭০ রানে ২ উইকেট হারানোর পর জুটি গড়েন নাজমুল হোসেন শান্ত ও মুমিনুল হক। এই জুটিতে ভর করে শুরুর ধাক্কা কাটিয়ে ওঠে বাংলাদেশ। এই জুটির অপরাজিত ৫২ রানে ভর করে দুই উইকেটে ১২২ রান করে লাঞ্চ বিরতিতে যায় বাংলাদেশ।
লাঞ্চ বিরতি থেকে ফিরে নিজেদের জুটিকে বেশিদূর নিয়ে যেতে ব্যর্থ হন তারা। দলীয় ১২৭ রানে শান্ত ফিরে গেলে ভেঙে যায় এই জুটি। ৮২ বলে ৩৮ রান করা শান্ত আগা সালমানের বলে শর্ট লেগে আব্দুল্লাহ শফিকের হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে প্যাভিলিয়নে ফিরে যান। তার বিদায়ে ভাঙে ৫৭ রানের জুটি।
শান্তর বিদায়ের পর দলীয় ১৫৩ রানে সাজঘরে ফিরে যান মুমিনুল হকও। আবরার আহমেদের বলে মিড অফে সাইম আইয়ুবের হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে সাজঘরে ফিরে যান যান মুমিনুল। আউট হওয়ার আগে করেন ৭১ বলে ৩৪ রান।
মুমিনুল সাজঘরে ফিরে গেলে জুটি গড়েন দুই অভিজ্ঞ ব্যাটার সাকিব ও মুশফিক। এই জুটিতে ভর করে সহজেই জয়ের লক্ষ্যে পৌঁছে যায় বাংলাদেশ। মুশফিক ২২ রানে ও সাকিব ২১ রানে অপরাজিত থাকেন। বাংলাদেশ আবারও পেল দেশের বাইরে টেস্ট সিরিজ জয়ের স্বাদ। এর আগে ২০০৯ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজ আর ২০২১ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষেই ছিল বিদেশে সিরিজ জয়ের স্মৃতি। এবার তাতে যুক্ত হলো পাকিস্তানের নাম।
এর আগে এই টেস্টের প্রথম ইনিংসে আগে ব্যাট করতে নেমে ২৭৪ রান করে পাকিস্তান। বিপরীতে লিটন কুমার দাস এবং মেহেদি হাসান মিরাজের প্রথম ইনিংসে গড়া ১৬৫ রানের বিশ্বরেকর্ডে পাকিস্তানের ২৭৪ রানের জবাবে বাংলাদেশ গিয়েছিল ২৬২ পর্যন্ত।টেস্ট ক্রিকেটে ৫০ এর আগে ৬ উইকেট হারানোর পর ৭ম উইকেটে বিশ্বরেকর্ড ১৬৫ রানের জুটি গড়েন দুই টাইগার ব্যাটার। লিটন পেয়েছিলেন ক্যারিয়ারের চতুর্থ শতক।
১২ রানে এগিয়ে থেকে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিংয়ে নেমে টাইগারদের পেস তোপে ১৭৪ রানেই গুটিয়ে যায় পাকিস্তান। যার ফলে প্রথমবারের মতো পাকিস্তানের বিপক্ষে সিরিজ জিততে বাংলাদেশের দরকার ছিল ১৮৫ রান। সেই লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে ৪ উইকেট হারিয়ে জয়ের লক্ষ্যে পৌঁছে যায় বাংলাদেশ। এই জয়ে প্রথমবারের টেস্টে পাকিস্তানকে হোয়াইটওয়াশ করে সিরিজ জিতলো বাংলাদেশ।
Leave a Reply