অনলাইন ডেস্ক :
আন্তর্জাতিক গণতন্ত্র দিবস উপলক্ষে আজ মঙ্গলবার রাজধানীতে ‘স্মরণকালের সবচেয়ে বড় গণসমাবেশ’ করার প্রস্তুতি নিয়েছে বাংলাদেশে জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)।
মঙ্গলবার (১৭ সেপ্টেম্বর) রাজধানী ঢাকায় এ গণসমাবেশ করার প্রস্তুতি নিয়েছে বিএনপি। গণসমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে যুক্তরাজ্য থেকে ভার্চুয়ালি বক্তব্য দেবেন দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
একই দিনে রাজধানীর বাইরে ৯টি মহানগরে বিএনপির সিনিয়র নেতাদের নেতৃত্বে একাধিক শোভাযাত্রা অনুষ্ঠিত হবে।
কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে চট্টগ্রামের বিশাল শোভাযাত্রায় নেতৃত্ব দেবেন বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহ উদ্দিন আহমদ।
আন্তর্জাতিক গণতন্ত্র দিবসে রাজধানী ঢাকায় গণসমাবেশ এবং ঢাকার বাইরে অন্য মহানগরগুলোতে ১৫ সেপ্টেম্বর শোভাযাত্রা করার কথা ছিল বিএনপির। কিন্তু বৈরী আবহাওয়ার কারণে কর্মসূচি পিছিয়ে মঙ্গলবার করার ঘোষণা দেয় দলটি।
এদিকে রাজধানীর মহানগর উত্তর, দক্ষিণ ও ঢাকা জেলা ছাড়াও আশপাশের সকল জেলা ও মহানগর থেকে নেতাকর্মীরা এই সমাবেশে যোগ দেবেন।
সংশ্লিষ্ট নেতারা জানান, এই সমাবেশ থেকে তারেক রহমান দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশে নতুন বার্তা দেবেন।
এ ছাড়া সিলেট, খুলনা, ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম, বরিশাল, রংপুর, ফরিদপুর, কুমিল্লা, রাজশাহী মহানগরে শোভাযাত্রা করবে বিএনপি। এতে নেতৃত্ব দেবেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্যসহ সিনিয়র নেতারা।
জানতে চাইলে দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী কালবেলাকে বলেন, গত ১৭ বছর আমরা কখনো ছিলাম ছোট কারাগারে অথবা বাংলাদেশ নামক ফ্যাসিবাদের বৃহৎ কারাগারে। ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে ফ্যাসিবাদের পতনের মধ্য দিয়ে সেই অবস্থার পরিবর্তন ঘটেছে।
তিনি বলেন, আমরা মুক্ত পরিবেশে ‘আন্তর্জাতিক গণতন্ত্র দিবস’ উপলক্ষে শান্তিপূর্ণভাবে ঢাকায় গণসমাবেশের প্রস্তুতি নিয়েছি। এবার নেতাকর্মীরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে এই সমাবেশ সফল করতে কাজ করেছেন।
তিনি আরও বলেন, এই সমাবেশের মূল আকর্ষণ বিএনপির ভারপ্রাপ্ত তারেক রহমান। তিনি কী বক্তব্য দেন, তা শোনার আগ্রহ নিয়েই গণতন্ত্রকামী মানুষ নয়াপল্টনে জমায়েত হবে।
দলীয় সূত্রে জানায়, মঙ্গলবারের সমাবেশে ঢাকা, টাঙ্গাইল, মানিকগঞ্জ, মুন্সীগঞ্জ ও নরসিংদী জেলা এবং নারায়নগঞ্জ ও গাজীপুর জেলা ও মহানগরের নেতাকর্মী ও সমর্থকরা অংশ নেবে।
এদিকে অতীতের মতো বাধা না থাকায় ভয়-ডরহীনভাবে বাস ট্রেনে অনেকটা রিলাক্স মুডে যেভাবে পারেন এই সমাবেশে যোগ দেওয়ার জন্য নেতাকর্মীরা প্রস্তুতি নিয়েছেন ।
ঢাকা জেলা বিএনপির প্রস্তুতি কেমন জানতে চাইলে সাধারণ সম্পাদক নিপুণ রায় চৌধুরী বলেন, সুশৃঙ্খলভাবে ঐক্যবদ্ধ ঢাকা জেলা বিএনপি নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে অনুষ্ঠেয় গণসমাবেশে অংশ নেবে; এই নির্দেশনাই নেতাকর্মীদের আমরা দিয়েছি।
জেলার দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতাদের সঙ্গে দফায় দফায় কথা বলেছি, নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলেছি উল্লেখ করে তিনি বলেন, সবার আগ্রহের জায়গা দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সমাবেশ থেকে কী বার্তা দেন। তার সেই বক্তব্য শোনার জন্যই মূলত নেতাকর্মীরা নয়াপল্টনে আসবেন।
তারেক রহমানের নেতৃত্বে বিএনপি ফিনিক্স পাখির মতো জেগে উঠেছে মন্তব্য করে নিপুণ রায় আরও বলেন, আসলে তারেক রহমান এখন নেতাকর্মীদের আস্থার প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়েছে।
তিনি যা বলেন, নেতাকর্মীরা তাই মেনে চলেন। তার এক ডাকেই জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে বিএনপির ৪২২ জন নেতাকর্মী জীবন উৎসর্গ করেছেন। বাকি নির্যাতনের কথা বাদ দিলাম। এটা পৃথিবীর ইতিহাসে বিরল ঘটনা।
বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান জানান, মঙ্গলবার আড়াইটায় নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এই সমাবেশ আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হবে। প্রধান অতিথি হিসেবে বিএনপি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বক্তব্য রাখবেন। এতে সভাপতিত্ব করবেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি আরো জানান, এই সমাবেশ পরিচালনা করবেন দলের প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, ঢাকা মহানগর উত্তরের সচিব আমিনুল হক এবং দক্ষিণের সদস্য সচিব তানভীর আহমেদ রবিন ঢাকার বাইরে শোভাযাত্রার নেতৃত্ব দেবেন।
বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটি সদস্যদের মধ্যে মঙ্গলবার সিলেট মহানগরে শোভাযাত্রার নেতৃত্ব দেবেন মির্জা আব্বাস, খুলনায় গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ময়মনসিংহে নজরুল ইসলাম খান, চট্টগ্রামে সালাউদ্দিন আহমেদ, বরিশালে বেগম সেলিমা রহমান, রংপুরে মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহম্মদ বীরবিক্রম।
ভাইস চেয়ারম্যানদের মধ্যে ফরিদপুরে বিএনপি ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, কুমিল্লায় মো. শাজাহান, রাজশাহীতে শামসুজ্জামান দুদু শোভাযাত্রার নেতৃত্ব দেবেন।
বিএনপির প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নেতৃত্বে দীর্ঘ ১৭ বছর আমরা গণতন্ত্র ও ভোটাধিকারের জন্য লড়াই করেছি। গত ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে ফ্যাসিবাদের পতন হয়েছে। এটা আমাদের প্রাথমিক বিজয়। এখন আমাদের চূড়ান্ত বিজয় অর্জন করতে হবে। সে জন্য গণতন্ত্র ও ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত আমরা মাঠে আছি এবং থাকব।
Leave a Reply