ছোটন কান্তি নাথ ::
কক্সবাজারের ৯ উপজেলাজুড়ে শারদীয় দুর্গোৎসব উপলক্ষে কয়েকশত পূজামণ্ডপের সার্বিক নিরাপত্তায় ব্যাপকভাবে তত্পরতা শুরু করেছেন এলিট ফোর্স র্যাবসহ সরকারের আইন-শৃঙ্খলাবাহিনীগুলো।
পূজামণ্ডপ এবং আশপাশের এলাকায় কয়েকস্তরের কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদারও করা হয়েছে গত দুইদিন আগে থেকেই। ইতোমধ্যে প্রতিটি মণ্ডপে সেনাবাহিনীর বিপুল সংখ্যক সদস্যের সমন্বয়ে নিরবচ্ছিন্নভাবে নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। পাশাপাশি এলিট ফোর্স র্যাবও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কাজ শুরু করেছেন।
কক্সবাজার জেলাজুড়ে র্যাবের ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা নিয়ে আজ মঙ্গলবার দুপুরে চকরিয়া পৌরশহরে চিরিঙ্গা হিন্দুপাড়াস্থ সার্বজনীন চকরিয়া কেন্দ্রীয় হরিমন্দির পূজামণ্ডপ প্রাঙ্গণে র্যাবের পক্ষ থেকে মতবিনিময় সভা করা হয়েছে। এতে সনাতনী সম্প্রদায়ের লোকজন, সাংবাদিক, সুশীল সমাজ ও রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দরা উপস্থিত ছিলেন।
চকরিয়া উপজেলা ও পৌরসভা পূজা উদযাপন পরিষদের উদ্যোগে আয়োজিত এই মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন র্যাব-১৫ এর কমান্ডিং অফিসার লেফটেন্যান্ট কর্নেল এইচ এম সাজ্জাদ হোসেন।
মতবিনিময় সভায় সভাপতিত্ব করেন চকরিয়া উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি ও হরিমন্দির উন্নয়ন-পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক তপন কান্তি দাশ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে র্যাব-১৫ এর কমান্ডিং অফিসার লেফটেন্যান্ট কর্নেল এইচ এম সাজ্জাদ হোসেন বলেন- সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট হয় এমন কোন কর্মকাণ্ডকে প্রশ্রয় দেওয়া যাবে না। যারা সম্প্রীতি নষ্ট করার চেষ্টা করবে তাদেরকে কঠিন শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে। অপরদিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও দেখা যায়, গুজব ছড়িয়ে উস্কানিমূলক বিভিন্ন পোস্ট দেওয়া হয়। এসব গুজবকে কোনভাবেই আমলে নেওয়া যাবে না। যারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গুজব ছড়িয়ে উস্কানিমূলক পোস্ট দিয়ে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করার চেষ্টা করবে তাদেরকে চিহ্নিত করে র্যাবসহ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করতে হবে।
তিঁনি আরও বলেন- বাঙালির প্রাণের শারদীয় দুর্গোৎসব যাতে উৎসবমুখর পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয় সেজন্য র্যাবসহ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ব্যাপক সজাগ-সতর্ক রয়েছে।
প্রধান অতিথি বলেন- বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ। সম্প্রীতির এই দেশে অপরাধীদের কোন ধর্ম নাই। তাদের কোন দল নেই। অপরাধ নির্মূলে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী কাজ করছে। অপরাধী যে-ই হোক তাদের আইনের আওতায় আনা হবে।
চকরিয়া সম্পর্কে পূর্ব অভিজ্ঞতা রয়েছে জানিয়ে র্যাব-১৫ এর কমান্ডিং অফিসার বলেন- চকরিয়ায় ৪৭টি পূজামণ্ডপে সনাতন ধর্মাবলম্বীরা যাতে নির্বিঘ্নে তাদের উৎসব পালন করতে পারবে। একইভাবে পুরো জেলার ৯ উপজেলার প্রত্যন্ত এলাকায়ও র্যাবসহ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করেছে।
মতবিনিময় সভায় চকরিয়া সার্বজনীন কেন্দ্রীয় হরিমন্দির উন্নয়ন ও পরিচালনা কমিটির সভাপতি প্রদীপ দাশের সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য দেন চকরিয়া থানার ওসি মো. মঞ্জুর কাদের ভূঁইয়া, চকরিয়া পৌরসভা বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি এম গিয়াস উদ্দিন ও সাধারণ সম্পাদক আবদুর রহিম, চকরিয়া উপজেলা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ছোটন কান্তি নাথ, সাংবাদিক মিজবাউল হক, পৌরসভা পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি টিটু বসাক, সহ-সভাপতি সুধাংশু বিমল সুশীল প্রমূখ। এ সময় উপস্থিত ছিলেন, র্যাব-১৫ এর কম্পানি কমান্ডার মেজর সাইফুল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এএসপি) জামাল হোসেন প্রমূখ।
Leave a Reply