1. coxsbazarshomachar@gmail.com : admin :
সদ্য পাওয়াঃ
খুটাখালী বনাঞ্চলে হাতির আক্রমণে নিহত-১,আহত-১ লামায় পাহাড়ি জনপদে বাস্তবায়িত হচ্ছে নান্দনিক সড়ক নেটওয়ার্ক উচ্ছেদের পর ফের বনভূমিতে ঘেরাবেড়াঃ নীরব বিট কর্মকর্তা নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তে মাইন বিস্ফোরণে আহত ২ লামায় “বিকল্প এক্সপ্রেস” তৈরি করছে বিভিন্ন ধরনের পরিবেশ বান্ধব ব্যাগ লামা উপজেলার ফাইতং ইটভাটায় অভিযান, ১১ লক্ষ টাকা জরিমানা চকরিয়ায় সেনা কর্মকর্তা তানজিম হত্যায় ১৮ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল আলীকদমে বাইক-ডাম্পার মুখোমুখি সংঘর্ষে ৩ জন নিহত চকরিয়ায় স্ত্রী হত্যাকারী মেহেদী লামায় আটক চকরিয়ায় বিয়ের আটমাসের মাথায় স্বামীর ছুরিকাঘাতে খুন সাংবাদিক কন্যা, শ্বাশুড়ি গুরুতর আহত

ওয়াগনারের বিদ্রোহে পুতিনের পোয়াবারো

  • পোস্টিং সময় : শনিবার, ১ জুলাই, ২০২৩

কক্সবাজার সমাচার ডেস্ক :
রোস্তভ-অন-ডনে রুশ সামরিক কার্যালয় ছাড়ার আগে ওয়াগনার গ্রুপের প্রধান ইয়েভগেনি প্রিগোজিন শেষ যে কথাটি বলেছিলেন তা হলো- তার বাহিনীর শক্তি প্রদর্শন পুরো দেশকে ‘তড়িৎপ্রবাহের মতো’ চমকে দিয়েছে। উল্লেখ্য, এর পরেই প্রিগোজিনের বিদায়ের মধ্য দিয়ে তার সৈন্যদের দখলে থাকা এলাকা ছাড়ার পর পুতিন একে ‘সশস্ত্র বিদ্রোহ’ বলে অভিহিত করেন।

প্রকৃতপক্ষেই প্রিগোজিনের কাজকর্ম সারা দেশকে ‘তড়িৎপ্রবাহের মতো’ চমকে দিয়েছিল ঠিকই, কিন্তু তিনি যেভাবে ভেবেছিলেন সেভাবে নয়। ওয়াগনার যখন অস্ত্রে সুসজ্জিত গাড়িগুলো নিয়ে মস্কোর অভিমুখে এগিয়ে আসছিলেন তখন রাশিয়ায় সত্যিকার অর্থে গৃহযুদ্ধের আশঙ্কা দেখা গিয়েছিল। এ সময় দক্ষিণ মস্কোতে রুটির ঝুড়ি বলে খ্যাত এলাকাগুলো এবং উত্তরের বিপুল জনসংখ্যার শহরগুলো থেকে খাদ্যদ্রব্য সরবরাহ বন্ধের হুমকি তুলনামূলক কম অনুমিত হলেও বাস্তব ছিল। ক্রেমলিনের ভয়ের আরেকটি বড় কারণ হলো- বিদ্রোহের সময় ইউক্রেনে যুদ্ধের ময়দানে অস্ত্র সরবরাহ ব্যবস্থা ঝুঁকির মধ্যে ছিল।

বিদ্রোহের দুই দিন পর প্রিগোজিন বলেছিলেন, তার ‘ন্যায়ের পদযাত্রা’ রাশিয়ার ঊর্ধ্বতন সামরিক কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ ছিল এবং এটা কোনো ক্যু’র চেষ্টা ছিল না। তিনি বলেছেন, এমন কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের তার ব্যক্তিগত সেনাদল বিলুপ্তির চেষ্টা রুখে দেওয়া গেছে, তারা এখন বেলারুশে যাচ্ছে। সেখানকার আইন অনুসারেই তারা কাজ করবে।

সন্দেহাতীতভাবে ওয়াগনারের মস্কোযাত্রার মধ্য দিয়ে রাশিয়ার প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার ফাঁক বেরিয়ে এসেছে। যদি ওয়াগনার না হয়ে এটা অন্য কোনো রাষ্ট্র হতো, ধরা যাক ইউক্রেন, তাহলে খুব একটা বাধা ছাড়াই তারা বিশাল রুশ এলাকা দখলে নিয়ে নিত।

রাশিয়ার রাজনৈতিক অসহায়ত্বকেও ফুটিয়ে তোলে এই বিদ্রোহ। পুতিন তার সব বক্তব্যেই এ ঘটনাকে বিদ্রোহ এবং বিশ্বাসঘাতকতা বলে বর্ণনা করেছেন। যদিও এখনো এমন মনে হচ্ছে, প্রিগোজিন বিদ্রোহের দায় থেকে বেঁচে যাবেন।

রুশ কর্তৃপক্ষ ওয়াগনার বিদ্রোহীদের ওপর থেকে অভিযোগ তুলে নিয়েছে এবং স্পষ্টত গ্রুপটি আগের মতোই অখণ্ড থাকবে। তবে হ্যাঁ, প্রিগোজিনের অব্যাহতি পুতিনকে দুর্বল হিসেবে দেখিয়েছে।

পশ্চিমা সমালোচকরা এ দুর্বলতাকে রুশ প্রেসিডেন্টের পতনের একটি চিহ্ন হিসেবে ব্যাখা করেছেন। পুতিনবিরোধী নির্বাসিত নেতা মিখাইল খরদোভোস্কি যুদ্ধাপরাধের দায়ে অভিযুক্ত একজন ব্যক্তির এই ক্যুর চেষ্টাকে অনুমোদন দিয়েছেন।

তবে সাধারণ রাশিয়ানরা এবং অভিজাতরা বিষয়টিকে অন্যভাবেও দেখতে পারেন। এটি পুতিন সরকারের মূল ভিত্তির সাথে সংশ্লিষ্ট যা ইতোমধ্যেই দীর্ঘায়ু নিশ্চিত করেছে। রাশিয়ার পৌরাণিক সাফল্যগাথার গল্প নয়, বরং দুয়ারে যুদ্ধের কড়া নাড়ার ভয় পুতিনকে মানুষের সমর্থন জুগিয়েছে।

এই ভয় ১৯৯০ এর দশকে চেচেন যুদ্ধের সময় বেশি কার্যকর ছিল। বিশেষত যখন চেচেন সৈন্যরা রাশিয়ার শহরগুলোতে আক্রমণ চালানো শুরু করে তখন। পুতিনের জনপ্রিয়তার প্রধান কারণগুলোর একটি হলো, সে সময় তিনি চেচনিয়াকে সফলভাবে বশীভূত করতে সক্ষম হয়েছিলেন।

২০১৪ সালে ইউক্রেনে বিপ্লবের পর অত্যন্ত বুদ্ধিদীপ্ততার সাথে পুতিন গৃহযুদ্ধ ও বিপর্যয়ের একই ভয় আবারও জাগিয়ে তোলেন। যেসব রাশিয়ানরা ক্ষমতার পরিবর্তনের আশা করেছিলেন, ইউক্রেনে রাশিয়ার প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ হস্তক্ষেপের পর সে আশায় গুড়েবালি দিয়েছেন পুতিন।

পুতিনের ক্ষমতায় বহাল থাকার মূল স্তম্ভ হলো তার বিকল্পহীনতা। এটা রুশদের বিখ্যাত রাজনৈতিক মিমটির কথা মনে করিয়ে দেয়। যেখানে বলা হয়, ‘পুতিন না হলে আর কে?’ এই কথাটির গূঢ় অর্থ হলো, যে কোনো বিকল্প নেতা আসলে তিনি পুতিনের চেয়ে খারাপ হবেন। প্রিগোজিনের কথাই ধরা যাক, তার রয়েছে খুনে মাস্তানের ভাবমূর্তি, যার বিরুদ্ধে সন্দেহের বশে মানুষকে হাতুড়িপেটা করে হত্যার অভিযোগ রয়েছে।

এটি বোঝা জরুরি যে, ইউক্রেনে সামরিক আগ্রাসন চললেও রাশিয়ানদের একটি বড় অংশ এখনো স্বাভাবিক জীবনযাপনের ভেতর রয়েছেন এবং রাশিয়ায় ইউরোপীয় ইউনিয়নের তুলনামূলক গরিব দেশগুলোর মতো সুযোগ-সুবিধা সম্বলিত নাগরিক জীবনযাত্রা পাচ্ছেন।

প্রিগোজিনের বিদ্রোহ হয়তো পুতিনকে দুর্বল দেখিয়েছে, কিন্তু গৃহযুদ্ধের যে বাস্তব আশঙ্কা ছিল তা সরাসরিভাবে এড়ানো গেছে। এই পরিস্থিতিতে এমনটাও হতে পারত যেখানে পুতিন শাসনামলের মোহভঙ্গ না করে প্রেসিডেন্টের পেছনে পুরো দেশ এসে দাঁড়িয়েছে।

পুতিন এটা বুঝেন এবং এ কারণেই তিনি গত সপ্তাহের ঘটনাপ্রবাহকে সাবধানে নিয়ন্ত্রণ করেছেন। বিদ্রোহ নিয়ে তার বক্তব্য অনেকটা এ রকম : আবেগ ও উচ্চাশা একজন সম্মানিত সহযোগীকে দুর্নীতিগ্রস্ত করে তুলেছে। প্রিগোজিন এখন তাগুতের পক্ষে চলে গেছেন। এটা অনেকটা রাশিয়ান আনাকিন স্কাইওয়াকারের মতো ঘটনা। তিনি সৈন্যদের সঙ্গে প্রতারণা করে তাদের বিদ্রোহে যোগ দিতে বাধ্য করিয়েছেন। তবে শেষমেশ আলোর শক্তির জয় হয়েছে এবং শান্তি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এই দেশের মানুষের একাত্মতাকে ধন্যবাদ।

পুতিন এবং অন্যান্য উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা ইতোমধ্যে কোনো প্রকার প্রমাণ ছাড়া জানিয়েছেন, প্রিগোজিন বিদেশি গোয়েন্দা সংস্থার স্বার্থে কাজ করে চলেছেন। এই মতবাদ অনুযায়ী, প্রেসিডেন্ট বিদ্রোহীদের প্রতি যে ছাড় দিলেন তা তাকে দায়িত্বশীল এবং স্থিতধী প্রমাণ করে। কেননা তিনি রক্তপাত এড়াতে সক্ষম হয়েছেন এবং নাগরিকদের রক্ষা করেছেন। তিনি যদি অন্যরকম ব্যবস্থা নিতেন তাহলে সেটি পশ্চিমা প্রতিপক্ষের জন্য জয় বলে বিবেচ্য হতো।

কেন খরদোভস্কির সমর্থনের পরও প্রিগোজিনের বৈপ্লবিক উত্থান রাশিয়ায় পাত্তা পেল না, এগুলো তারই ব্যাখ্যা। ক্রেমলিনের মতবাদ অনুযায়ী, রাশিয়া আরও বড় প্রতিপক্ষের সঙ্গে একটি অবরুদ্ধ দুর্গের মতো অস্তিত্বের লড়াইতে শামিল হয়েছে; সেটি হলো পশ্চিমা বিশ্ব।

পুতিনের শাসনামল চিরন্তন নয়। আগে হোক পরে হোক এরও পতন হবে। কিন্তু রাশিয়ায় সশস্ত্র দ্বন্দ্বের এসব আশঙ্কা আদতে পুতিনের শাসনামলের আয়ু কমাচ্ছে না, বরং বাড়াচ্ছে।

২০১১-১২ সালে শান্তি আর উন্নতির শিখরে অবস্থানের সময় বলত্নায়া প্রতিবাদে পুতিনের সাম্রাজ্য সবচেয়ে দুর্বল অবস্থায় পৌঁছেছিল। এরপর ইউক্রেন যুদ্ধে পুতিনের ভূমিকা, এসবেরই প্রতিক্রিয়া ছিল।

হয়তো ইউক্রেনে আকস্মিক হার পুতিন শাসনামলের দ্রুত অবসান ঘটাতে পারে (এতে প্রিগোজিনের মতো কেউ ক্ষমতায় আসতে পারেন)। কিন্তু সমঝোতার মাধ্যমে যুদ্ধের অবসান এবং পরবর্তীতে পশ্চিমাদের সঙ্গে সন্ধি রাশিয়ার রাজনৈতিক পরিস্থিতি উন্নয়নে ভূমিকা রাখবে। সূত্র : আল জাজিরা

মূল লেখা : লিওনিড রাগোজিন, রিগাভিত্তিক একজন ফ্রিল্যান্স সাংবাদিক।

সোস্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো পড়ুন
সর্বস্বত্ত্ব সংরক্ষিত © ২০২৩ কক্সবাজার সমাচার
Site Customized By NewsTech.Com
error: Content is protected !!